চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের কাছে চিঠি লিখে তার জবাব পেল বাংলাদেশি শিশু আলিফা চীন। দেশটির মেডিকেল কলেজে পড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে চিঠি লিখেছিলেন শিশু আলিফা।
সম্প্রতি সেই চিঠির জবাব দিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট। চীনা রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম সিনহুয়ার এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। শি জিনপিং তার চিঠিতে আলিফাকে পড়াশোনায় উৎসাহ জুগিয়ে লিখেছেন, আলিফা বড় হয়ে বাংলাদেশ-চীনের বন্ধুত্বের বার্তাবাহক হওয়ার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করায় এবং চীনের মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা শেষে চীনা মায়েদের সেবার করা যে ইচ্ছা পোষণ করেছে তাতে তিনি খুবই আনন্দিত।
তিনি আরও বলেন, আলিফার স্বপ্ন বাংলাদেশ এবং চীনের মধ্যকার ঐতিহ্যবাহী সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। আলিফা চীনের চিঠি দুই দেশের মধ্যকার বন্ধুত্বের একটি ভালো উদাহরণ।
প্রাচীন কাল থেকেই চীনা ও বাংলাদেশিরা ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী এবং ভালো বন্ধু, যাদের বন্ধুত্বপূর্ণ আদান-প্রদান হাজার বছরেরও বেশি পুরোনো। চীনা প্রেসিডেন্ট তার চিঠিতে আরও লেখেন, ৬০০ বছরেরও বেশি সময় আগে চীনের মিং সাম্রাজ্যের আমলে ঝেং হে নামে চীনা নাবিক দুইবার বাংলাদেশে গিয়েছিলেন। যা দুই দেশের মানুষের মধ্যকার সম্পর্কের গভীরতাকেই নির্দেশ করে।
শি জিনপিং আরও বলেন, ৬০০ বছর পর চীনের নৌবাহিনীর একটি ভাসমান হাসপাতাল ‘দ্য পিস আর্ক’ এর একটি বন্ধুত্বপূর্ণ এবং মানবিক ভ্রমণের সময় চীনের এক নারী চিকিৎসক আলিফার মাকে একটি বিপজ্জনক সময় অতিক্রম করতে এবং চট্টগ্রামে তাকে (আলিফাকে) জন্ম দিতে সাহায্য করেছিলেন এবং আলিফার বাবা তার সন্তানের নাম রেখেছিলেন চীনের বাংলাদেশি প্রতিশব্দ (আলিফা চীন) অনুসারে। এটি চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বের একটি অত্যন্ত মর্মস্পর্শী গল্প।
শি আশা প্রকাশ করে বলেন, আলিফা তার তারুণ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহার করবে এবং কঠোর পড়াশোনার মাধ্যমে তার পরিবার, সমাজ এবং দেশের মানুষের সেবা করতে সক্ষম হবে।উল্লেখ্য, আলিফা চীন ২০১০ সালে বাংলাদেশ ভ্রমণরত চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) নৌবাহিনীর ভাসমান হাসপাতাল ‘দ্য পিস আর্কে’স চীনা চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে জন্মগ্রহণ করেন। সে সময় আলিফার মা গর্ভজনিত জটিলতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন।
কিন্তু স্থানীয় হাসপাতালে আধুনিক প্রযুক্তি না থাকায় তার চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছিল না। পরে সে সময় পিস আর্ক চট্টগ্রামে হাজির হলে সেখানেই আলিফার জন্ম হয়। কৃতজ্ঞতা হিসেবে আলিফার বাবা তার সন্তানের নামের শেষ অংশে চীন জুড়ে দেন।