বাউফলে এমপি ও মেয়য় গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। রোববার দুপুরে ডাকবাংলোর সামনে তোরণ নির্মাণ করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আহত ছাত্রলীগ কর্মী তাপস দাস (২৫) রাত ৮টায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্হায় মারা গেছেন।
নিহত তাপসের ভাই রাজীব দাস তাপসের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। তাপস উপজেলার কালাইয়া গ্রামের বিধু দাসের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, রোববার দুপুর ১টার দিকে পৌর শহরের জেলা পরিষদের ডাক বাংলোর সামনে বাউফল পৌরসভার মেয়র ও পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ জিয়াউল হক জুয়েলের পক্ষে করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে প্রচারের জন্য একটি তোরণ নির্মাণ করা হচ্ছিল। এসময় এমপি আ,স,ম ফিরোজ গ্রুপের সমর্থক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও নাজিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুকের নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী এসে বাধা দেয়। খবর পেয়ে মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল ঘটনাস্থলে আসলে ইব্রাহিম ফারুকের সাথে তার তর্কবিতর্ক হয়। এসময় উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা মারমুখি হয়ে পরে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায়ার এক পর্যায়ে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়। দুপুর ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ৩ ঘন্টা ধরে দফায় দফায় দু পক্ষের সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষ চলাকালে ইউএনও এবং বাউফল সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক হোসেনের মধ্যস্থতায় মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল ও ইব্রাহিম ফারুককে নিয়ে ওসির কক্ষে সমঝোতা বৈঠক চলাকালে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কালাইয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মনির মোল্লার নেতৃত্বে কালাইয়া থেকে ২০-৩০ জন লোক মটরসাইকেলযোগে ডাকবাংলোর সামনে এসে জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে তোরণের বাঁশের খুটি ভেঙ্গে ফেলে। এসময় মেয়র গ্রুপের সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে তাদেরকে ধাওয়া করলে তারা ডাকবাংলোর মধ্যে আশ্রয় নেয়। এসময় এমপি গ্রুপের ছাত্রলীগ কর্মী তাপস (২৫), পঙ্কজ (৩৫) আহত হয়।
এ ঘটনার আগে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় এমপি গ্রুপের নাজিরপুর ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন ও ছাত্রলীগ কর্মী শামীম এবং মেয়র গ্রুপের যুবলীগ কর্মী ইব্রাহিম (৩৫), বাউফল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইউসুফ (২৫) আহত হয়। পুলিশ লাঠি চার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। আহতদের মধ্যে ছাত্রলীগ কর্মী তাপসকে (২৫) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পঙ্কজকে (৩৫) বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকাল সাড় পাঁচটা )উভয় গ্রুপের মধ্যে উত্তেজন বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে বাউফল পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ জিয়াউল হক জুয়েল বলেন,‘ শহরের পরিবেশ অশান্ত করতেই ইব্রাহিম ফারুকের নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সংবলিত করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে তোরণ নির্মাণকালে বাধা দেয় এবং তোরণের কাঠামো ভাংচুর করে।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও নাজিরপুরের ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুক বলেন,‘আমার কোন বক্তব্য নেই। কি ঘটেছে তা সবাই দেখেছে।’
সহকারী পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন বলেন,‘পরিবেশ শান্ত রাখার জন্য দুই পক্ষকে নিয়ে ফের আলোচনা হবে। তবে কোনো ভাবেই বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করতে দেওয়া যাবে না। কঠোরহস্তে দমন করা হবে।
ইউএনও জাকির হোসেন বলেন যে কোন মুল্যে পরিস্হিতি শান্ত রাখা হবে।