বরিশাল সোনালী ব্যাংকে গণবদলী

বরিশালে সোনালী ব্যাংকে দুই শীর্ষ কর্মকর্তা বদলী হওয়ায় তারা বিদায়ের আগে স্থানীয় কর্মকর্তাদের গণবদলী করেছেন এমন অভিযোগ উঠেছে। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার দুইদিনে ৬৪ কর্মকর্তকে বদলী করা হয়।

অভিযোগ উঠেছে, সম্প্রতি ঢাকায় বদলীর আদেশ হওয়া ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) গোলাম সিদ্দিক বরিশাল ত্যাগের আগের দিন গত বুধ ও বৃহস্পতিবার গণবদলী করেছেন। আরও আগে বদলীর আদেশ পাওয়া ব্যাংকের জেনারেল ম্যানেজারও (জিএম) গত বৃহস্পতিবার বিদায় নিয়েছেন। তাদের আস্থাভাজনদের সুবিধাজনক স্থানে পদায়ন করতে বুধ ও বৃহস্পতিবার বরিশাল জোনে গণবদলী করা হয়।

অভিযোগ, প্রধান কার্যালয়সহ বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তাদের বদলী করে ওই পদে নগরীর বাইরের বিভিন্ন শাখা কর্মকর্তাদের পদায়ন করা হয়েছে। করোনা সংকটকালীন সময়ে গণবদলী করায় কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। 

ব্যাংক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিয়মানুযায়ী একজন কর্মকর্তা এক কর্মস্থলে তিন বছর থাকতে পারবেন। যারা গণবদলীর শিকার হয়েছেন তাদের বেশীরভাগেরই তিন বছর পূর্ণ হয়নি। নগরীর সাগরদী শাখা ব্যবস্থাপক দেবাশীষ চৌধুরী ওই শাখায় চার মাস আগে যোগদান করলেও তাকে বদলী করা হয়েছে বাবুগঞ্জ শাখায়।

জানা গেছে, গত বুধবার নগরীর বিএম কলেজ শাখা ব্যবস্থাপকসহ বিভিন্ন শাখার মোট ২৩ জনকে এবং পরদিন বৃহস্পতিবার আরও ৪০ জন কর্মকর্তাকে বদলীর আদেশ দেয়া হয়। বিএম কলেজ শাখা ব্যবস্থাপকের তিন বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই তাকে বদলী করা হয়। একজন কর্মকর্তার স্ত্রী সন্তান সম্ভবা হওয়ায় তার বদলীর আদেশ বাতিলের আবেদন করা হলেও তা গ্রহন করেননি ডিজিএম গোলাম সিদ্দিক।

এ প্রসঙ্গে বরিশাল সোনালী ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি মজিবর রহমান বলেন, গত সপ্তাহে ব্যাপক বদলি করা হয়েছে। গত এক বছরে এরকম গণবদলির নজীর নেই। তিনি বলেন, ডিজিএম এবং জিএম অনেককে পূর্বে বদলী করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। আবার অনেকের বর্তমান কর্মস্থলে ৩ বছর পূর্ণ হয়েছে। যে কারণে তারা (ডিজিএম এবং জিএম) বদলি হওয়ার আগে অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করেছেন। আকস্মিক বদলীতে কিছু কর্মকর্তার সমস্যা হয়েছে। তিনি সংগঠনের সভাপতি হিসেবে কর্মকর্তা কর্মচারীদের এধরণের সমস্যা জানলে সমাধানের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করবেন।

সোনালী ব্যাংক বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো: হারুন অর রশিদ বলেন, ডিজিএম হয়তোবা পূর্বে অনেককে বদলী করে আনার ওয়াদা দিয়েছিলেন। এজন্য তিনি বিদায়ের আগে এভাবে কর্মকর্তাদের অদল-বদল করে বদলি করেছেন। করোনা পরিস্থিতিতে কর্মকর্তাদের সমস্যা হলে তা পুণ:বিবেচনার জন্য সুপারিশ করা হবে বলে তিনি জানান।

এ প্রসঙ্গে সোনালী ব্যাংকের বরিশাল সিনিয়র প্রিন্সিপল অফিসার শামিমুল নিজাম বলেন, এভাবে বদলীর বিষয়ে তার মতামত নেয়া হয়নি। তিনি কেবল দেখেছেন এবং শুনেছেন।

তবে ব্যাংকের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংকের একটি সিন্ডিকেট এ বদলির মাধ্যমে তাদের অনুসারী কর্মকর্তাদের নগরীতে পদায়নের ব্যবস্থা করেছেন।

এব্যাপারে ডিজিএম গোলাম সিদ্দিক সাংবাদিকদের বলেন, কর্মকর্তাদের নিজ নিজ স্বার্থেই তাদের বদলী করা হয়েছে। এতে কারো অসুবিধা হলে তা কর্তৃপক্ষ দেখবেন। ডিজিএম বলেন, বদলির আদেশ হলেও করোনা সংকট মোচনের পর তা বাস্তবায়ন হবে। বদলির ক্ষেত্রে কোন অনিয়ম হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, ৩ বছরের নিচে যাদের বদলি করা হয়েছে, সেটা তার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা করেছেন।