বরিশালে গত ২৪ ঘন্টায় আরো ৬৪ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে এই নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৫৩২ জনে।
অদ্যাবধি এ জেলায় করোনা থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে ৫৫ জন রুগী। আজ শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী উজিরপুর উপজেলার বাসিন্দা ২ জন, গৌরনদী উপজেলার বাসিন্দা ১ জন, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ১১ জন সদস্য এবং পুলিশ পরিবারের সদস্য ২ জন, শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১ জন চিকিৎসক, ৩ জন নার্স ও ১ জন স্টাফসহ মোট ৫ জন, শেবাচিম হাসপাতালের নার্সের পরিবারের ২ জন সদস্য, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন অধিভুক্ত সাগরদী, রুপাতলী, কাউনিয়া এবং বাংলাবাজার এলাকার বাসিন্দা ৫ জন করে মোট ২০ জন, আমানতগঞ্জ, আলেকান্দা আমতলার মোড় এলাকার বাসিন্দা ২ জন করে মোট ৬ জন, চৌমাথা, বিএম স্কুল মোড়, ধান গবেষনা রোড, কলেজ রোড, বগুড়া রোড, ফকির বাড়ি, কমিশনার অফিস, কাঠপট্টি, ভিআইপি রোড, মুসলিম গোরস্থান রোড, কাশিপুর, ১০ এপিবিএন, ল কলেজ এলাকার বাসিন্দা ১ জন করে মোট ১৩ জন, বরিশাল সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ও চরকাউয়া ইউনিয়নের দিনারের পুল এলাকার ১ জন করে মোট ২ জন তাদের কোভিড-১৯ পজিটিভ পাওয়া গেছে।
আজ ৪ জুন বৃহস্পতিবার বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ এর মাইক্রোবায়লোজি বিভাগে স্থাপিত আরটি-পিসিআর ল্যাবে বেশ কিছু নমুনা পরীক্ষা করা হলে ৬৪ জনের রিপোর্ট পরেজটিভ আসে। বরিশাল জেলা প্রশাসক এস, এম, অজিয়র রহমান জানান, রিপোর্ট পাওয়ার পর পরই ওই ৬৪ জন ব্যাক্তির অবস্থান অনুযায়ী তাকে লকডাউন করা হয়েছে তাদের আশপাশের বসবাসের অবস্থান নিশ্চিত করে লকডাউন করার প্রক্রিয়া চলছে। পাশাপাশি তাদের অবস্থান এবং কোন কোন স্থানে যাতায়াত ও কাদের সংস্পর্শে ছিলেন তা চিহ্নিত করার কাজ চলছে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজ পর্যন্ত বরিশাল জেলায় ১৩৯ জন নারী এবং ৩৯৩ জন পুরুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।
এদের মধ্যে শূণ্য থেকে ২০ বছর বয়স পর্যন্ত আক্রান্ত ৩৮ জন, ২০ থেকে ৫০ বছর পর্যন্ত আক্রান্ত ৪০৪ জন, ৫০ থেকে তার উর্ধে ৯০ জন। আজ করোনায় আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৪ বছরের শিশু এবং ৬২ বছরের বৃদ্ধ বয়সী রোগী রয়েছে। বরিশাল জেলায় করোনা আক্রান্ত উপজেলা সমূহ বরিশাল মহানগরী ৪১৬, সদর উপজেলা ১১জন (রায়পাশা কড়াপুর, শায়েস্তাবাদ-২, টুংঙ্গীবাড়িয়া, জাগুয়া, চরকাউয়া-৪ এবং চরমোনাই-২), বাবুগঞ্জ ২৪জন, উজিরপুর ১৮ জন, মেহেন্দীগঞ্জ ১০জন, বাকেরগঞ্জে ১৯জন, হিজলা ৫জন, মুলাদী ৮জন, বানারীপাড়া ৯জন, আগৈলঝাড়া ৬জন এবং গৌরনদীতে ৬জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়। উল্লেখ্য আজ ৪ জুন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১ জন চিকিৎসক, ৩ জন নার্স ও ১ জন স্টাফসহ স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত ৫ জন ব্যক্তির করোনা শনাক্ত হয়েছে। করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে এ জেলায় স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত ২০ জন চিকিৎসক (ইন্টার্ন চিকিৎসক ৬ জন), ৩১ জন নার্স, ২ জন রেজিস্টার, ১ জন নার্স সুপারভাইজার, ২ জন মেডিকেল টেকনলজিস্ট, ২ জন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, ১ জন স্টোরকিপার, ১ জন ড্রাইভার, ১০ জন স্টাফ, ১ জন কার্পেন্টার, ১ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী সহ সর্বমোট ৭২ জন ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
বরিশাল জেলায় মুলাদী উপজেলায় করোনা শনাক্ত হয়ে ১ জন ব্যক্তি গত ১২ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন। গত ৩০ মে করলার উপসর্গ নিয়ে মুলাদী উপজেলায় আরো ১ জন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেন। গত ৩০ মে বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ১ জন ব্যক্তি করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। গত ৩ জুন ১ জন বরিশাল মহানগরীর আলেকান্দা এলাকার বাসিন্দা করোনা পজিটিভ হয়ে মারা গেছেন। অদ্যাবধি এ নিয়ে বরিশাল জেলায় ৪ জন করোনা পজিটিভ ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেন। গত ১২ এপ্রিল এ জেলায় প্রথমবারের মতো মেহেন্দীগঞ্জ ও বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পরিপ্রেক্ষিতে ঐদিনই জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।