ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংযোগ ক্লাস (টিউটোরিয়াল/ প্রেজেন্টেশন), পরীক্ষার সময় বাংলা বিভাগের ছাত্রীদের মুখমণ্ডল খোলা রাখার নোটিশে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। এ আদেশর ফলে সংযোগ ক্লাস, মধ্যবর্তী (মিডটার্ম) পরীক্ষা, চূড়ান্ত পরীক্ষা বা মৌখিক পরীক্ষার সময় পরিচয় শনাক্তে ছাত্রীদের মুখমণ্ডল খোলা রাখতে হবে।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভটু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) নিষ্পত্তি করে বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ আজ সোমবার এ আদেশ দেন। সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্টে বিচারাধীন এ সংক্রান্ত রুল দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী বেলায়েত হোসেন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. ফয়জুল্লাহ ফয়েজ।
পরে আইনজীবী আইনজীবী মো. ফয়জুল্লাহ ফয়েজ, “রুল নিষ্পত্তি হাইকোর্টের আদেশটি স্থগিত করা হয়েছে।
আর রুলটি দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলেছেন।”
গত বছর ১১ ডিসেম্বর বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান একটি বিজ্ঞপ্তি দেন। এতে বলা হয়, ‘বাংলা বিভাগের সকল শিক্ষার্থীকে জানানো যাচ্ছে যে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর (২০২২) অনুষ্ঠিত বাংলা বিভাগের একাডেমিক কমিটি সর্বসম্মতভাবে নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে: “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী বাংলা বিভাগের প্রতি ব্যাচের সংযোগ ক্লাস (টিউটোরিয়াল/ প্রেজেন্টেশন), মিডটার্ম পরীক্ষা, চূড়ান্ত পরীক্ষা এবং মৌখিক পরীক্ষার সময় পরীক্ষার্থীকে পরিচয় শনাক্ত করার জন্য কানসহ মুখমণ্ডল পরীক্ষা চলাকালীন দৃশ্যমান রাখতে হবে।”
ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ‘এ সিদ্ধান্ত প্রতিটি ক্লাসে শিক্ষকগণ ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের অবহিত করেছেন।কিন্তু লক্ষ করা যাচ্ছে যে, কোনো কোনো শিক্ষার্থী এই সিদ্ধান্ত পালনে শৈথিল্য দেখাচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়: “১৮ সেপ্টেম্বর গৃহীত সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে যারা পালন করবে না তাদের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
পরে এ বিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তিন শিক্ষার্থীর পক্ষে আইনজীবী মো. ফয়জুল্লাহ ফয়েজ গত ১৯ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন। শুনানির পর গত ২৮ মার্চ রুলসহ আদেশ দেন উচ্চ আদালত। আদেশে নোটিশের কার্যকারিতা স্থগিত করেন উচ্চ আদালত।সেই সঙ্গে মুখমণ্ডল ঢেকে রাখা সংক্রান্ত নোটিশটি কেন আইনগত কর্তৃত্ববর্হিভূত ঘোষণা করা হবে না, আদালত রুলে তা জানতে চান।
শিক্ষা সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, রেজিসট্রার ও বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যানকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
এরপর এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। গত ৭ মে চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশে হস্তক্ষেপ না করে আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। সে ধারাবাহিকতায় আজ সোমবার আবেদনটিতে শুনানির পর আদেশ হলো।