চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় রাস্তার ঠিক মাঝখানে ১১ হাজার ভোল্টেজ ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ সংযোগের খুঁটি। একটি নয়, পর পর তিনটি! যদিও এমনটি আগে ছিল না। খুঁটিগুলো রাস্তার পাশেই ছিল।
তবে সড়ক সম্প্রসারণের কারণে পরপর তিনটি বিদ্যুতের খুঁটি এখন রাস্তার মাঝখানে অবস্থান করছে। এগুলোকে না সরিয়েই সড়ক সংস্কার করা হয়েছে।
খুঁটিগুলোর কারণে একদিকে যেমন চলাচলে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন পথচারীরা, অন্যদিকে দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতকিছুর পরও বৈদ্যুতিক খুঁটি অপসারণে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।
উল্টো এলজিইডি এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি একে অপরকে দায় চাপাচ্ছেন। রোববার ঘটনাস্থলটি পরিদর্শন করেছেন দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোকসানা মিতা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, জুড়ানপুর বাজার থেকে পশ্চিমপাড়া পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগের ৩টি খুঁটি রাস্তার মাঝখানে পড়েছে। রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন ভ্যান, রিকশা, অটোবাইক, ট্রাক্টর, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কমলমতি শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। ব্যস্ততম এ সড়কের মাঝখানে বৈদ্যুতিক খুঁটি থাকায় চলাচলে বাধার মুখে পড়ছেন যাতায়াতকারী হাজারো মানুষ। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২২ সালের ৬ ডিসেম্বর থেকে ৯৪ লাখ ৬ হাজার ৭০৭ টাকা ব্যয় ধরে দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর-লক্ষ্মীপুরের ১.৪০ কিলোমিটার সড়কে সংস্কার ও সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়। পরপর তিনটি খুঁটি সড়কের মধ্যে পড়লেও তা তোয়াক্কা না করেই সম্পন্ন হয়েছে সড়ক সংস্কার।
গ্রামবাসী জানায়, সড়ক সংস্কারের সময় বারবার আপত্তি তুললেও তা কর্ণপাত করেনি বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান। এক প্রকার তাড়াহুড়ো করেই সংস্কার কাজ শেষ করা হয়েছে। এমনকি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি।
এদিকে সড়কের মাঝখান থেকে বৈদ্যুতিক খুঁটি সড়ানোর দায়িত্ব নিচ্ছে না কেউই। পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ড বলছে, সড়ক উন্নয়ন কাজের আগে বিষয়টি অবহিত করেনি এলজিইডি।
মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চুয়াডাঙ্গা জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আয়েশা সিদ্দিকা সরকার বলেন, নিয়ম অনুযায়ী এলজিইডি কিংবা সড়ক বিভাগ সড়ক প্রশস্ত অথবা নির্মাণ করতে গেলে বিদ্যুৎ বিভাগকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অবহিত করতে হবে। তারা কেউ বিষয়টি জানায়নি। যার ফলে জনগণের স্বার্থ বিঘ্নিত হচ্ছে। এটি মোটেও কাম্য নয়।
এলজিইডির এমন খামখেয়ালির ব্যাপারে কথা বলতে রাজী হননি চুয়াডাঙ্গা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম। এ ব্যাপারে তিনি দামুড়হুদা উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য পরামর্শ দেন।
দামুড়হুদা উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুর রসিদ বলেন, বিষয়টি প্রথমে বোঝা যায়নি। কিন্তু রাস্তা প্রশস্ত হওয়ার পর খুঁটিগুলো রাস্তার মধ্যে চলে আসে।
এখন খুঁটিগুলো অপসারণের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে খরচের তালিকা চাওয়া হবে। সে তালিকা অনুযায়ী খরচের অনুমোদন পেলে তখন খুঁটি সরানো সম্ভব হবে।
দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা মিতা বলেন, জনস্বার্থে সবার সমন্বয়ে এ সমস্যার সমাধান করা হবে। এজন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও এলজিইডির মধ্যে সমন্বয় করে খুঁটি অপসারণ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।