উচ্চ আদালত থেকে জামিনে থাকার পরও কলেজ শিক্ষার্থী মো. আশরাফুল হাওলাদারকে গ্রেফতারের ঘটনায় পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৮ জুন, স্ব-শরীরে তাদেরকে উপস্থিত হয়ে আদালতে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
ওসি ছাড়া অপর পুলিশ কর্মকর্তা হচ্ছেন পটুয়াখালী সদর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মিজানুর রহমান। রোববার (২১ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্ব-প্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ
দেন।
রুলে জামিনে থাকা সত্ত্বেও উদ্দেশ্যমূলকভাবে গ্রেফতার করে বাংলাদেশের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন আদালত। বিষয়টি সোমবার (২৯ মে) গণমাধ্যমকে জানান সংশ্লিষ্ট আইনজীবী।
গত ২০ মে একটি জাতীয় দৈনিকে ‘জামিন নেওয়া শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, পটুয়াখালী সদর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেওয়া কলেজ শিক্ষার্থী মো. আশরাফুল হাওলাদারকে গ্রেফতার করে আদালতের পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে।
গত বৃহস্পতিবার (১৮ মে) রাতে আসামির বাড়ি থেকে গ্রেফতার করার পর শুক্রবার সকালে আদালতে পাঠানো হয় ওই শিক্ষার্থীকে। এ সময় পুলিশকে হাইকোর্টের জামিনের কপি দেখালেও তা আমলে নেয়নি বলে দাবি আসামির পরিবারের।
পরিবারের অভিযোগ, আটকের পর পুলিশ মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। তা দিতে না পারায় পুলিশি ক্ষমতার বলে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। যদিও হাইকোর্টের জামিননামা দেখে শুক্রবার (১৯ মে) দুপুরে আসামিকে ছেড়ে দিয়েছেন পটুয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. জামাল হোসেন।
আশারাফুল হাওলাদার পটুয়াখালী সদর উপজেলার মরিচবুনিয়া ইউনিয়নের বাজারঘোনা গ্রামের আব্দুল লতিফ হাওলাদারে ছেলে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জেলা আইনজীবী সমিতি।
আশরাফুলের চাচা রাজা মিয়া বলেন, বৃহস্পতিবার সদর থানা পুলিশের এএসআই মিজানুর রহমান তার ভাতিজাকে আটক করেন। তার পরিবার ওই রাতে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী আলী আহসান মোল্লার স্বাক্ষরিত প্রত্যয়নপত্র ও জামিননামার অনলাইন কপি দেখায় পুলিশকে।
এ প্রসঙ্গে এএসআই মিজানুর রহমান বলেন, আমি ওয়ারেন্ট অনুযায়ী আসামিকে গ্রেফতার করেছি। এরপর আশরাফুলের পরিবার ওসি স্যারের সঙ্গে কথা বলেছেন, ওসি স্যার কাগজপত্র দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ওই প্রতিবেদন ২১ মে আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী আলী আহসান মোল্লা। এরপর হাইকোর্ট আদেশ দেন। আদেশের লিখিত অনুলিপি সাংবাদিকদের হাতে আসে সোমবার (২৯ মে)।