ভারতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতি ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগে আন্দোলন বেড়েই চলেছে। যদিও কেন্দ্রীয় সরকার বিজেপির সাংসদ ব্রিজভূষণ বরাবরই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। কিন্তু তাকে সরানোর দাবিতে গত মাস থেকে দেশটির রাজধানী দিল্লিতে আন্দোলন করে চলেছেন কুস্তিগিররা। খবর দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।
গতকাল রোববার উদ্বোধনের দিন নতুন সংসদ ভবনের সামনে বিক্ষোভের ঘোষণা দিয়েছিলেন তারকা কুস্তিগিররা। এছাড়া বিভিন্ন কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছিলেন।
কিন্তু সকালেই তাদের আটক করা হয়। রাতের দিকে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বড়খাম্বা থানায়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ছ’টি ধারায় তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু করা হয়েছে।
আটকের তালিকায় ছিলেন বিনেশ ফোগাট, সাক্ষী মালিক, বজরং পুনিয়াদের মতো তারকারা। এবার তাদের এমন দুর্দশা দেখে চুপ করে থাকতে পারেননি অলিম্পিক্সে ইতিহাস সৃষ্টিকারী নীরজ চোপড়া, বিজেন্দ্র সিংহের মতো ক্রীড়াবিদরা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিনেশ, সাক্ষীদের টেনে হিঁচড়ে পুলিশ ভ্যানে তোলার ভিডিও ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। যে ভিডিও দেখে অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জজয়ী বক্সার বিজেন্দ্র সিংহ টুইট করেন, ‘আজ আমার সঙ্গে হচ্ছে, কাল তোমাদের সময় আসবে। সবার সময় আসবে।’ জ্যাভলিনে অলিম্পিক্স সোনাজয়ী নীরজ গণমাধ্যমে লিখেছেন, ‘এই ঘটনা দেখে খুবই কষ্ট হচ্ছে। আরও ভাল ভাবে এই ব্যাপারটা সামলানো যেত।’
ভারতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীও টুইটারে লেখেন, ‘কোনো বিবেচনা ছাড়াই কেন কুস্তিগিরদের টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে? এটা উপযুক্ত ব্যবহার নয়। আশা করি এই বিতর্কের সমাধান যে পথে হওয়া উচিত সে ভাবেই হবে।’
এদিকে বন্দি অবস্থায় বাসে বসে চোখে জল নিয়ে বিনেশ বলেছিলেন, ‘আসল অপরাধীকে সরকারের তরফ থেকে আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে দেশের জন্য পদক আনা ক্রীড়াবিদরা আজ কারাগারে বন্দি। তাদের অপরাধ, তারা দেশের মেয়েদের জন্য ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেছিল।’
চুপ করে থাকেননি সাক্ষী মালিকও। তিনিও টুইটারে সরকারের বিরুদ্ধে নিজের ক্ষোভ উগরে দেন। অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জজয়ী এই নারী কুস্তিগিরের মন্তব্য, ‘এই রকম ভাবেই দেশের চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে ব্যাবহার করা হচ্ছে।
সারা বিশ্ব আমাদের দেখছে। যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত সাংসদ ব্রিজভূষণ আজও সংসদে বসেছেন আর আমাদের রাস্তা থেকে টেনে হিঁচড়ে পুলিশের গাড়িতে তোলা হচ্ছে।
ভারতীয় ক্রীড়ার জন্য আজ দুঃখের দিন।’ তিনি আরও লিখেন, ‘দেশের জন্য পদক প্রাপ্তি কি কোনো গর্হিত অপরাধ? যদি উত্তর হ্যাঁ হয়, তবে আমাদের ফাঁসির আদেশ দিন।’