ঝালকাঠির নলছিটিতে মামলা তুলে না নেওয়ায় এক তরুণী ও তার মা-বোনকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এসময় তাদেরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বুধবার (১০ মে) সকালে ৯ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন ওই তরুণী। এরআগে সোমবার (৮ মে) দুপুরে উপজেলার রানাপাশা ইউনিয়নের তেতুলবাড়িয়া গ্রামের বিশ্বাস বাড়িতে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
আহত ইতি আক্তার (২২) ওই গ্রামের মজিবর বিশ্বাসের মেয়ে। তিনি ও তার মা শাহিনুর বেগম (৫৫), বোন ঝুমুর বেগম (২৩) বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, কিছুদিন আগে একই বাড়ির বাবুল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন ইতি আক্তার। এই মামলায় গত ৭ মে আদালত থেকে জামিন পেয়ে বাবুল বিশ্বাস বাড়িতে এসে মামলা তুলে নিতে ওই তরুণীর পরিবারকে চাপ দিতে থাকেন।
মামলা না তোলায় গত সোমবার দুপুর ২টার দিকে বাবুল বিশ্বাসের স্ত্রী রুনু বেগম ইতি আক্তারকে গালাগাল দিতে থাকেন। ইতি আক্তার প্রতিবাদ করলে তাকে ও তার মা-বোনকে টেনে বাবুল বিশ্বাসের বসতঘরে নিয়ে যায় মামলার আসামিরা।
এরপর রড, লাঠি ও রামদার উল্টো পিঠ দিয়ে তাদেরকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে বাবুল বিশ্বাস ও তার সহযোগীরা। ডাক-চিৎকারে শুনে ইতি আক্তারের বাবা এগিয়ে এলে তাকেও পিটিয়ে জখম করে আসামিরা।
মারধরের একপর্যায় ইতি আক্তারের গলায় থাকা একটি স্বর্ণের চেইন ও তার বোনের কানে থাকা একজোড়া স্বর্ণের দুল ছিনিয়ে নিয়ে যায় বাবুল বিশ্বাস। খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য জাকির হোসেন আহতদের উদ্ধারের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
পরবর্তীতে মোল্লারহাট তদন্ত কেন্দ্র থেকে পুলিশ এসে তাদেরকে উদ্ধার করে। এরপর আহতদের নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেন। নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান জানান, এ ব্যাপারে মামলা রুজু হয়েছে। আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।