বরিশাল সিটি নির্বাচনে পরাজিত মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তার ছবি সংবলিত বিভিন্ন ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ ও সভা করেছে জেলা ও মহানগর ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা।
বুধবার (১৪ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল নগরের সদররোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সভা করা হয়। সভা শেষে দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বরিশাল সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় সদ্য বহিষ্কৃত কামরুল আহসান রুপনের ছবি সংবলিত ব্যানারে অগ্নিসংযোগ করা হয়। আর সেই ছবিতে রুপনের গলায় জুতোর মালা পড়ানো ছিল।
এছাড়া রুপনের ছবি সংবলিত ব্যানারের পাশে রুপনকে মীরজাফর, গাদ্দার, বেইমানসহ বেশ কিছু উপাধি দেওয়া ব্যানারও শোভা পাচ্ছিলো। এছাড়া শ্রমিকদের কাছ থেকে অটোরিকশার টোকেন বিক্রি করে হাতিয়ে নেওয়া টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানানো সংবলিত ব্যানারও ছিল সেখানে।
বরিশাল দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি সবুজ আকনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপি আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মুসফিকুল হাসান মামুন, যুবদল নেতা সাকলাইন, জেলা দক্ষিণ ছাত্রদল সহ-সভাপতি লিয়ন, নজরুল,যোবায়ের, আরিফ সিকদার ও হাবিব সিকদার।
এ সময় বক্তরা বলেন, দলের সঙ্গে বেইমানি করা এ মীরজাফরকে বরিশালবাসী চিনে রাখুন। আমরা এ গাদ্দার, বেঈমান, মীরজাফর রুপনকে বরিশাল থেকে বিতাড়িত করব ইনশাআল্লাহ। জানা গেছে, পরাজিত মেয়র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল) ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট বিলকিস জাহান শিরিনের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্য দেওয়ায় ক্ষোভ সৃষ্টি হয় হয় তৃণমূলের নেতাদের।
আর এ নেতাকর্মীরাই আজ রুপনের বিরুদ্ধে কর্মসূচির আয়োজন করে। প্রতিবাদে বরিশালে বিক্ষোভ করেছেন জেলা ও মহানগর ছাত্রদল ও যুবদলের সদস্যরা। এদিকে বেলা সোয়া ১১টায় নিজস্ব নির্বাচনী মিডিয়া সেলে কামরুল আহসান রুপন একটি বার্তা দিয়েছে। যেখানে তিনি বরিশাল সিটি করপোরেশনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করার কথা বলেছেন।
ওই বার্তায় তিনি বলেন, প্রিয় বরিশালবাসী ও সম্মানিত সাংবাদিক বৃন্দ আসসালামু আলাইকুম, আপনারা জানেন যে, ১২ জুন ২০২৩’ বরিশাল সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন কার্যক্রম চলা অবস্থায় নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণাধীন আইনশৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষসহ অন্যান্য প্রশাসন একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায়ের নামে মেয়র প্রার্থীদের ধোয়াশার মধ্যে রাখতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, ভোট কার্যক্রম চলাকালীন সময় ৩০ ওয়ার্ডের অধিকাংশ ভোট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ও পুলিং অফিসারদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ও নিয়ন্ত্রণে এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তত্ত্বাবধানে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা ও কর্মীরা ভোটারদের বল প্রয়োগ করে নৌকা মার্কা প্রতীকে ভোট প্রদানে বাধ্য করেছেন।
তিনি আরও বলেন, সাধারণ ভোটারদের ভোট দিতে বাধাগ্রস্ত করেছে যার ফলে সাধারণ ভোটাররা ভোট দিতে পারেনি। মেয়র প্রার্থী ও কর্মীদের ওপর যে হামলার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ইতিহাস তার সাক্ষী হয়ে থাকবে। ভোট গণনার পূর্বক্ষণে সব কেন্দ্র থেকে আমার প্রতিনিধি পুলিং এজেন্টদের বের করে দিয়েছে পূর্ব পরিকল্প অনুযায়ী।
ইভিএম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে একটি ফলাফল সৃষ্টির করে নৌকা মার্কার প্রার্থীকে বিজয়ী দেখিয়ে যে ফলাফল ঘোষণা করেছেন এটি ডিজিটাল প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই আমি এ প্রহসনের নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করিলাম।