নদীর পাড়ে বসে ভাঙনের করুন চিত্র দেখছিলেন রেবু বেগম। হয়ত কয়েকদিনের মধ্যে মাথা গোঁজার শেষ ঠাঁইটুকু হারাতে হবে তাকে। এর আগে চার ভাঙা দিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন ভেদুরিয়া এলাকায়। এখনও পড়ছেন ভাঙনের মুখে।
রেবু বেগম বলেন, নদীতে সব নিয়া গেছে, চার ভাঙা দিয়েছে। এখন যেখানে আশ্রয় নিয়েছি সেটিও ভাঙনের মুখে। এমনি অবস্থা ভোলা সদরের ভেদুরিয়া ইউনিয়নের। চলতি বর্ষা মৌসুমে তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। যা ভাবিয়ে তুলেছে এলাকাবাসীকে। শুধু রেবু বেগম নয়, তার মতো অনেকেই এখন ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন।
জানা গেছে, ভেদুরিয়া লঞ্চঘাট থেকে চর চটকিমারা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এ ভাঙন চলছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদীর পাড়ের মানুষ। শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে গেলে কোথায় আশ্রয় নেবেন এমন চিন্তার ছাপ তাদের চোখ মুখে।
চলতি বর্ষায় নদীর এ ভাঙন ঠেকানো না গেলে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ভাঙনের মুখে পড়বে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। ভেদুরিয়ার বাসিন্দা সিরাজ ও নীরব বলেন, নদী যেভাবে ভাঙছে, তাতে সব বিলীন হয়ে যাবে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে।
এলাকাবাসী জানায়, গত বর্ষায় ভাঙন শুরু হলে ব্লকের দাবিতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছিলেন তারা, কিন্তু ভাঙন রোধে তেমন ব্যবস্থা নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড। যে কারণে অনেক স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
এ অবস্থা চলমান থাকলে অচিরেই লঞ্চঘাট, মাঝিরহাট গ্যাস কূপ, ব্যাংকেরহাট বাজার, মডেল মসজিদ, টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ভাঙনের মুখে পড়বে। ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, মেঘনা ও তেঁতুলিয়া বেসিনে ফিজিউবিলিটি স্ট্যাডি বা সম্ভাব্যতা সমীক্ষা চলছে, এ কাজ শেষ হলেই ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বিষয়টি আমরা পর্যবেক্ষণে রেখেছি, যদি জরুরি প্রয়োজন হয় তাহলে ব্যবস্থা নিতে পারবো।
এদিকে গত কয়েক বছর ধরে ভোলা সদরের ভেদুরিয়া ইউনিয়নের লঞ্চঘাট, চর চটকিমারা ও মাঝিরহাট পয়েন্টসহ বিভিন্ন এলাকা দিয়ে তেঁতুলিয়ার ভাঙন চলছে। এতে বহু মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে ঐতিহ্যবাহী ভেদুরিয়া ইউনিয়নকে রক্ষার দাবি এলাকাবাসীর।