বাতাসের মাধ্যমে করোনা ছড়ানোর প্রমাণ পেয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

সম্প্রতি ৩২টি দেশের ২৯৩ বিজ্ঞানী দাবি করেছিলেন যে, বাতাসে ভেসে বেড়াতে পারে করোনাভাইরাস। তাদের সেই দাবির প্রমাণ পেয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। নতুন প্রমাণ পাওয়ার পর করোনা নিয়ে স্বাস্থ্যবিধিতে বদল আনবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানিয়েছে, কয়েক দিনের মধ্যে একটি বৈজ্ঞানিক নির্দেশিকা জারি করবে তারা। সেখানেই হয়তো নতুন স্বাস্থ্যবিধির কথা জানানো হবে। সেইসঙ্গে বিশ্বকে সতর্ক করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, এই ভাইরাস এখনও ছড়াচ্ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডিরেক্টর টেড্রস আধানম জানিয়েছেন, এখনও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বরং দিন দিন তা বেড়েই চলেছে। বিশ্বে প্রথম চার লক্ষ আক্রান্ত হতে যেখানে ১২ সপ্তাহ বা ৩ মাস সময় লেগেছিল, সেখানে বর্তমানে এক সপ্তাহেরও কম সময়ে চার লক্ষ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন।

আধানম বলেন, ‘এখনও সংক্রমণ বাড়ছে। আমরা এখনও এই সংক্রমণের শিখরে পৌঁছাইনি। তবে বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির হার কিছুটা কমেছে। তার কারণ হল, বেশ কিছু দেশ মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু এখনও অনেক দেশে তা বেড়েই চলেছে। গোটা বিশ্বকে বন্দি করে নিয়েছে এই ভাইরাস।’

গত সোমবার ৩২ দেশের ২৩৯ জন বিজ্ঞানী দাবি করেন, নভেল করোনাভাইরাসের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম ড্রপলেট বেশ কিছুক্ষণ হাওয়ায় ভেসে বেড়াতে পারে। তাদের কাছে এর একাধিক প্রমাণ রয়েছে। অর্থাৎ হাওয়ায় ভেসে একজনের থেকে অন্যজনকে সংক্রামিত করতে পারে এই ভাইরাস। তাই স্বাস্থ্যবিধি বদল করা উচিত।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে একটি খোলা চিঠি দিয়ে একথা জানান ওই বিজ্ঞানীরা। আগামী সপ্তাহে একটি জার্নালে এই সংক্রান্ত তথ্য ও কীভাবে তা ছড়ায় সেই সম্পর্কে লেখা প্রকাশিত হবে বলেও জানিয়েছেন তারা। কীভাবে এই সংক্রমণ থেকে বাঁচা সম্ভব সে সম্পর্কেও বেশ কিছু পরামর্শ দেওয়া থাকবে সেখানে।

বিজ্ঞানীদের দাবি, একজন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি হাঁচি বা কাশি দিলে তার নাক ও মুখ থেকে বেরনো ড্রপলেট হাওয়াতে ভেসে বেড়ায়। একটা ঘরের সমান দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে তারা। বেশ কিছুক্ষণ হাওয়াতে জীবিত থাকে এই ভাইরাস। অর্থাৎ ওই ব্যক্তির ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরেও সেখানে ভাইরাস সক্রিয় থাকে। পরেও কারও শরীরে ওই ভাইরাস বাসা বাধতে পারে বলেই জানাচ্ছেন তারা। অর্থাৎ সামাজিক দূরত্ব পালন করলেই এই ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচা সম্ভব নয় বলেই তাদের যুক্তি।

এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বারবার জানিয়েছে, হাওয়ায় ভাইরাসের ভেসে বেড়ানোর তেমন অকাট্য প্রমাণ তারা পায়নি। কয়েক দিন আগেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইনফেকশন প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোলের টেকনিক্যাল প্রধান ডক্টর বেনেডেট্টা আল্লেগ্রাঞ্জি বলেন, ‘গত কয়েক মাস ধরে বারবার অনেকেই দাবি করেছেন করোনাভাইরাস হাওয়ায় ভেসে বেড়াতে পারে। কিন্তু তার সেরকম অকাট্য কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি।’