লঞ্চ চলবে আগের ভাড়ায়

ভাড়া না বাড়িয়ে লঞ্চ পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। শুক্রবার (২৯ মে) বিকালে মতিঝিলে অবস্থিত বিআইডব্লিউটিএ অফিসে লঞ্চ মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, আজকের আলোচনার বিষয় ছিল কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করে যাত্রী পরিবহন করা যায়। বৈঠকে তাদের (মালিকদের) একটা আবেদন ছিল, ভাড়া বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে। যেহেতু সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখলে যাত্রীর পরিমাণ কমে যাবে। তবে বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন আছে

টেকনিক্যাল বিষয় রয়েছে, জনসাধারণের ওপর কোনও চাপ আসে কিনা, সেই বিষয়টিও দেখতে হবে। এজন্যই আমরা আরেকটু দেখে শুনে বিষয়টি নিয়ে আলাদা করে বসবো। তবে আজ ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি। 

সামাজিক দূরত্ব পালন করলে যাত্রীর পরিমাণ কমবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের লঞ্চগুলোর যাত্রী পরিবহনের যে ডিজাইন করা আছে, আমরা যদি সেই পরিমাণ যাত্রী পরিবহন করি তাহলে আমাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সমস্যা হবে না। সেই বিষয়টিও উনারা (মালিকরা) আমলে নেবেন।

এর পরেও যখন লঞ্চ চালু থাকবে, সেই বিষয়টি আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবো।

পরে সন্ধ্যায় বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে স্বাস্থ্য ও নৌবিধি পালন করে ৩১ মে থেকে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এক্ষেত্রে আগের রেটেই ভাড়া আদায় হবে।

আগামী ১০ দিন পরিবহন ব‍্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করে ভাড়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এতে আরও বলা হয়, দেশের সব নদীবন্দরে যাত্রীদের জন্য জীবাণুমুক্ত হওয়ার টানেল স্থাপন ও যাত্রী পরিবহনের আগে থার্মোমিটারের মাধ‍্যমে তাপমাত্রা পরিমাপের ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া যাত্রীদের জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারেরও ব্যবস্থা থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

তবে বৈঠকে লঞ্চ মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল সংস্থার সভাপতি মাহবুব উদ্দিন আহমদ বলেন, ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে আমরা বিভিন্ন সময় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে খবর পাঠিয়েছি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যদি যাত্রী পরিবহন করি, তাহলে আমাদের যাত্রী পরিবহনের সংখ্যা অনেক কমে যাবে। কারণ, গত ৫০ বছর ধরে আমরা যে ডিজাইনে জাহাজ পরিচালনা করে আসছি, তাতে দিনের বেলায় জাহাজ চলে এক রকম আর রাতের বেলায় দেখা যায় আরেক রকম।এটা একটা সমস্যা।

দ্বিতীয়ত, জাহাজ কতখানি লোড নিতে পারবে? আমাদের খরচ যাতে উঠে আসে সেই বিষয়টিও চিন্তাভাবনা করে আমরা বিগত বছরগুলোতে জাহাজ পরিচালনা করে আসছি।

কিছু লাভের মুখও আমরা দেখেছি। এখন সামাজিক দূরত্ব যদি মানতে হয়, তাহলে আমার ব্যক্তিগত ধারণা জাহাজে যাত্রী কমবে। এ অবস্থায় যদি যাত্রী সংখ্যা কমে যায়, তাহলে আমাদের ভাড়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে।

তবে এসব বিষয়ে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।